নুরুল আমিন ভূঁইয়া দুলাল লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে ৫৩তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস আজ রোববার (২৬ মার্চ) পালন করা হয় । আজ সকালে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উপজেলা মাঠে কুচকাওয়াজ এর মাধ্যমে বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীদের কুচকাওয়াজ ও শারীরিক কসরত এর মাধ্যমে দিবসটি পালন করা হয়।
সকালে স্মৃতিসৌধে রায়পুর উপজেলা প্রশাসন এবং বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। পৌর শহরের বিভিন্ন দপ্তরের রেলি সহকারে সর্বস্তরের জনগণ উপজেলা অডিটরিয়ামে আলোচনা সভায় মিলিত হন। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট অঞ্জন দাশ। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডা:- এহসানুল হক যোগ্লুল,চেয়ারম্যান এ্যাসেনশিয়াল ড্রাগ, এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এক্সিকিউটিভ রাসেল ইকবাল, রায়পুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মামুনুর রশীদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল হায়দার বাবুল পাঠান, রায়পুর পৌরসভার মেয়র গিয়াস উদ্দিন রুবেল ভাট, রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শিপন বড়ুয়া, এছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মামুনুর রশীদ বলেন, ৫২ সালের মহান ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লড়াই ১৯৭১ সালে এসে পূর্ণাঙ্গ রূপ পায়। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বর নির্যাতন, নির্বিচার হত্যাযঞ্জ ও রক্তসাগর পাড়ি দেয়ার পর মেলে পরম চাওয়া স্বাধীনতার। যথাযথ মর্যাদায় সারা দেশে পালিত হচ্ছে দিনটি।
দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিশ্বের মানচিত্রে নতুন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটে একটি ভূখন্ডের, যার নাম বাংলাদেশ।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল হায়দার বাবুল পাঠান বলেন ১৯৭১ সালে সদ্য স্বাধীন হওয়া বাংলাদেশের মাত্র ৭৮৬ কোটি টাকার বার্ষিক বাজেট আজ পরিণত হয়েছে ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেটে। সেদিনের ১২৯ ডলার মাথাপিছু আয়ের দেশটিতে বর্তমান মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৮১৪ মার্কিন ডলার। সময় পেরিয়েছে, বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশও এগিয়েছে। মাথাপিছু আয়, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে দৃশ্যমান পরিবর্তন, বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ ও দেশজ উৎপাদন, বৈদেশিক বাণিজ্য, প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ও ব্যবহার এবং সম্পদ উৎপাদন ও আহরণ দৃশ্যমানভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
রায়পুর উপজেলা নির্বাহি অফিসার অঞ্জন দাশ আলোচনায় বলেন, স্বাধীনতার পর বাংলাদেশকে ‘তলাবিহীন ঝুড়ির’ দেশ আখ্যা দেয়া হয়েছিল। স্বাধীনতার ৫০ বছর পরে এসে দারিদ্র্য আর দুর্যোগের বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উত্তরণের পথে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধিসহ আর্থসামাজিক প্রতিটি সূচকে এগিয়েছে বাংলাদেশ। এ প্রাপ্তি নিয়েই এবারও জাতি স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করছে।
তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী বীর শহীদ এবং জাতীয় চার নেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও সমর্থক, বিদেশি বন্ধু এবং সর্বস্তরের জনগণকে কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন।
প্রধান অতিথি ডা:- এহসানুল হক মিলন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু সবসময় রাজনৈতিক স্বাধীনতার পাশাপাশি একটি সুখী-সমৃদ্ধ দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখতেন। তার সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে বর্তমান সরকার নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। দারিদ্র্য বিমোচন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, মানবসম্পদ উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়ন, শিশু ও মাতৃমৃত্যু হার হ্রাস, লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণ, গড় আয়ু বৃদ্ধিসহ আর্থসামাজিক উন্নয়নের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে।