নুরুল আমিন ভূঁইয়া দুলাল লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপ ও পুলিশের সঙ্গে ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে চার পুলিশ ও এক সাংবাদিকসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হওয়ার সংবাদ পাওয়া গেছে। গতকাল বুধবার রাত আনুমানিক শাড়ে ৮ টার দিকে চন্দ্রগঞ্জ বাজারে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
জানা যায় চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটিকে কেন্দ্র করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতারা নিজেদের মধ্যে এ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। খবর পেয়ে পুলিশ সংঘর্ষ বন্ধ করতে লাঠিচার্জ ও কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে।
এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাজারে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সংঘর্ষের ঘটনায় ১১ জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। তবে রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তাদের নাম জানা যায়নি।
আহত পুলিশের মধ্যে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের উপ-পরিদর্শক জাকির হোসেন, কনস্টেবল মোজাম্মেল ও আকবর হোসেন নামে এক ছাত্রলীগ নেতাকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ সময় সংঘর্ষের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে আলাউদ্দিন নামে স্থানীয় এক সংবাদকর্মী আহত হয়েছেন। অন্য আহতদের নাম পরিচয় জানা যায়নি।
জানা গেছে, গত দুই বছর থেকে চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটিতে একই পদে পাল্টাপাল্টি নেতা অন্তভুক্ত করা হয়। এ নিয়ে বির্তক দেখা দিলে জেলা আওয়ামী লীগ প্রায় ১০ মাস আগে সেই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে। তবে বহিষ্কৃত নেতারা নিজেদের পদ ব্যবহার করে দলীয় কার্যক্রম চালিয়ে যেত।
মঙ্গলবার চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কাশের চৌধুরী এবং সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওহাব তাদের নিজস্ব ফেজবুক পেজে চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির একটি চিঠি প্রকাশ করে। এতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক বহিষ্কৃত সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিনকে সদস্য করা হয়। এতে আগের কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গিয়াস উদ্দিন লিঠন ও সাধারণ সম্পাদক কাজী সোলায়মানসহ তাদের অনুসারীরা
ওইরাতে বিক্ষোভ মিছিল করে। ৮ মার্চ বিকেলে তাদের অনুসারীরা পুনরায় বিক্ষোভ করে।
স্থানীয় লোকজন ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বুধবার সন্ধ্যায় ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিনের নেতৃত্বে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির নেতাকর্মী ও তাদের দুই থেকে আড়াইশ অনুসারী চন্দ্রগঞ্জ বাজারে আনন্দ মিছিল বের করে। মিছিল শেষ তারা আফজাল সড়কের মুখে জড়ো হয়ে বক্তব্য দেন। খবর পেয়ে চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এম মাসুদ আলমের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আগের কমিটির অনুসারীরা দলবদ্ধ হয়। খবর পেয়ে আনন্দ মিছিলে থাকা লোকজন তাদের ওপর হামলা করে। এ সময় তাদের নিবৃত্ত করতে গিয়ে দুই পক্ষের লোকজনের মাঝে পড়ে আহত হন চার পুলিশ সদস্য।
সংঘর্ষে জড়িতরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। ফলে ত্রিমুখী সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রায় আধাঘণ্টা ব্যাপী সংঘর্ষে পুলিশ, সাংবাদিকসহ উভয়পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হন। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাজারে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযান চালিয়ে ১১ জনকে আটক করা হয়।